ধানের ন্যায্য দামে নিশ্চিত হোক কৃষকের হাসি
- আপলোড সময় : ০৪-০৫-২০২৫ ১২:৩৯:০৩ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৪-০৫-২০২৫ ১২:৩৯:০৩ পূর্বাহ্ন

প্রকৃতির অপরূপ শোভায় ভরপুর আমাদের হাওরাঞ্চল যেন বাংলাদেশের এক অপার সৌন্দর্য ও সম্ভাবনার আধার। একসময় যে জনপদ ছিল শুধুই বর্ষার ঢেউ আর জলরাশির রাজত্ব, আজ সেখানে রচিত হচ্ছে এক নতুন উন্নয়নের কাব্য। বিস্তীর্ণ জলাভূমিতে এখন বয়ে যাচ্ছে সোনালি ধানের স্বপ্ন।
উন্নত জাতের বীজ, আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির প্রয়োগ, সরকারি সহায়তা এবং অনুকূল আবহাওয়ার সমন্বয়ে হাওর এখন যেন ধান উৎপাদনের এক নতুন ঘাঁটি। প্রান্তিক কৃষক, যাদের কপালে একসময় শুধু দুশ্চিন্তার রেখা ছিল, আজ তাদের মুখে ঝিলমিল হাসি। ফসল ঘরে তোলার আনন্দে ভরে উঠছে তাদের হৃদয়।
বোরো মৌসুমে হাওরের দিগন্ত বিস্তৃত মাঠে দোল খায় সোনালি ধানের ঢেউ - এ যেন গ্রামীণ জীবনের এক বিজয়গাথা। এই ফসল ঘরে তুলতে পারলে কৃষকের সংসারে ফিরে আসবে সচ্ছলতা। সন্তানদের শিক্ষার ব্যয় নির্বাহ থেকে শুরু করে দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজন মেটানো হবে অনেক সহজতর। ভবিষ্যতের জন্য নেওয়া যাবে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা।
তবে এই আশার মাঝে আছে এক গভীর শঙ্কা, বাজারে ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তি কি আদৌ নিশ্চিত হবে? ফসল ফলানোর আনন্দ যদি শেষ পর্যন্ত মধ্যস্বত্বভোগীদের খপ্পরে পড়ে তিক্ততায় রূপ নেয়, তবে কৃষকের দীর্ঘ পরিশ্রম বৃথা যেতে বাধ্য। সরকারি গুদামে ধান সরবরাহের প্রতিশ্রুতি কতটা বাস্তবায়িত হবে, সেই প্রশ্নও রয়েছে।
এই সমস্যা নিরসনে চাই কার্যকর ও স্বচ্ছ বাজার ব্যবস্থা। প্রয়োজন কঠোর প্রশাসনিক নজরদারি, যাতে কোনো অসাধু ব্যবসায়ী কিংবা দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা কৃষকের দুর্বলতার সুযোগ না নিতে পারে। কৃষকের মুখের হাসি স্থায়ী করতে হলে তার কষ্টার্জিত ফসলের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতেই হবে। আমরা প্রত্যাশা করি একটি টেকসই কৃষি অর্থনীতি, যেখানে হাওরের প্রাকৃতিক সম্ভাবনা ও কৃষকের শ্রম মিলিয়ে গড়ে উঠবে একটি সমৃদ্ধ ও স্বাবলম্বী সমাজ। আমরা আশাবাদী, এবার কৃষকরা যেমন তাদের কষ্টার্জিত ফসল নিরাপদে ঘরে তুলতে পারবেন, তেমনি ন্যায্য মূল্যে ধান বিক্রয়ের মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হবেন।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ